আলমেরে (Almere), Netherlands
তুষার রঞ্জন মণ্ডল
আলমেরে, নেদারল্যান্ডস এর এক নতুন শহর। রাজধানী আমস্টারডাম থেকে কম বেশি 40 কিলোমিটার দুরে। Flevoland প্রদেশে ।
তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে। রাজধানী আমস্টারডাম এর জনসংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। নতুন বসবাসের উপযোগী জায়গা চাই।
তখন সরকার দুটো শহর তৈরির পরিকল্পনা করে। এই Flevoland প্রদেশ ছিল শুধু কৃষির জন্য । দুটো ভাগে ভাগ এই প্রদেশ Oostelijk Flevoland এবং Zuidelijk Flevoland.
Oostelijk Flevoland পরে হয়ে যায় Lelystad । তার ইতিহাস আবার অন্য।
আর 1970 সালে Zuidelijk Flevoland হয়ে গেল Almere Lake এর নামে Almere (আলমেরে)
একটা লেকের নামে একটা শহর , মানে লেক টিকে প্রসিদ্ধি দেওয়া হল। পুরোনো নামটা এখন সবাই ভুলে গেছে। নামটা ছিল Zuiderzee.
জনবসতি গড়ে তোলার জন্য সরকার পরিকল্পনা গ্ৰহন করে, প্রথম একটা বাড়ি তৈরি করে 1976 সালে।
কি অদ্ভুত নৈপুণ্যে মাত্র আট বছরের মধ্যে সেই ছোট্ট কৃষি ক্ষেত্র 1984 সালে হয়ে গেল মিউনিসিপ্যালিটি। ভাবা যায়! অতি উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে এই শহরকে গড়ে তোলা হয়েছে। ধীরে ধীরে এই শহর লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে।
একটা ছোট্ট পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আলমেরের মোট আয়তন 248.77 বর্গ কিমি।
তার মধ্যে জলাশয় 119.58 বর্গ কিমি। তাহলে দেখা যাচ্ছে মাত্র 129.19 বর্গ কিমি বসবাসের জন্য পাওয়া যায়। এই অল্প পরিসরে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে, চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে, আমাদের বসবাসের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য অক্ষুন্ন রেখে সরকার ধাপে ধাপে তার পরিকল্পনা রুপায়ন করে চলেছে।
ইতিমধ্যে ছয়টি বিভাগ এর মধ্যে চারটি বিভাগের কাজ মোটামুটি ভাবে শেষ হয়েছে।
বিভাগ গুলি হলো 1) Almere Stad, 2) Almere Buiten, 3) Almere Haven, 4) Almere Poort.
Almere Pampus এখনও তৈরির অপেক্ষায়।
Almere Hout (‘Almere Woods’) বন্যপ্রান, প্রকৃতির সাথে যুক্ত হতে, পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে।
বাঁচতে হলে চাই অক্সিজেন।
শুধু শহর গড়লেই হয় না।
শহরকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে। শহরের ধারন ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া শহর গঠন করা যায় না।
আলমেরে লেকের কোলে বসতি গড়ে আলমেরের অধিবাসীরা এখন এক সুস্থ, সাবলীল জীবনের অংশীদার।
গত দুহাজার একুশের জানুয়ারী মাসের পরিসংখ্যান বলছে , এই শহরের জনসংখ্যা 214715 জন।
তার মধ্যে ডাচ জনসংখ্যা 118944 জন।
ইউরোপীয় অভিবাসী জনসংখ্যা 17380 জন।
অ ইউরোপীয় অভিবাসী জনসংখ্যা 64590 জন। বাকী জনসংখ্যার বেশীরভাগ সুরিনাম, মরোক্কো, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, ইত্যাদি বিভিন্ন দেশ থেকে আসা।
Zuidelijk Flevoland তলিয়ে গেল স্মৃতির আড়ালে। শুধু আলমেরে লেকের স্মৃতির আয়নায় আলমেরে হয়ে গেল মিউনিসিপ্যালিটি। আজ এই শহরে সবকিছু আছে। পরিবহনে আছে রেল যোগাযোগ।আছে বাস সার্ভিস। আছে হাইওয়ে।
আলমেরে শহরের উত্তর পশ্চিম দিকে আছে Marker meer, উত্তরপুর্বে আছে Lelystad,
পুর্বে আছে Zeewolde, আর দক্ষিনে আছে Goolmeer. সমুদ্র এর তিনদিকে ঘিরে আছে। শুধু জলাভূমি দিয়ে শহরের পরিয়াবরন সমৃদ্ধ হয়েছে। দুষনমুক্ত বায়ু যাতে সবাই পেতে পারে, তার জন্য পরিকল্পনা রুপায়িত। সামুদ্রিক আবহাওয়া সারা বছর আকাশ জুড়ে প্রবহমান। ঠান্ডায় কুপোকাত হতে হয় সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ। বাকী মাসগুলোতে একটু বাঁচোয়া ঠান্ডা থেকে। শীতপ্রধান দেশে ঠান্ডা তো থাকবেই। তবে জুলাই অগাস্ট মাসে তাপমাত্রা কখনো কখনো 35° থেকে 36° হয়ে যায়। এটা স্বাভাবিক। সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে নেদারল্যান্ডস একটা স্বপ্নের দেশ। এখানে নেই কোনো রাজনৈতিক দলের কপচা কপচি। শুধু কাজ আর কাজ, আর আছে বিনোদনের নানা ধরনের ব্যবস্থা।
ইতিহাস বলছে নেদারল্যান্ডস ছিল “ রিপাবলিক” । জনগনের দ্বারা শাসিত, জনগনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, জনগনের দ্বারা নির্বাচিত, প্রতিনিধি দ্বারা দেশের উন্নয়ন ঘটানো। ১৫৮১ সাল থেকে এই রিপাবলিক ১৮০৬ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ২২৫ বছর একটানা ছিল রিপাবলিকান দলের ছত্রছায়ায়।
এরপরে ১৮০৬ সাল থেকে ১৮১০ সাল পর্যন্ত এই দেশে রাজতন্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হল। ১৮১০সাল থেকে ১৮১৩ সাল পর্যন্ত এই দেশটা ফরাসী দেশের একটা প্রদেশ হিসেবে রয়ে গেল। ১৮১৪ সাল থেকে আবার একটা গনতান্ত্রিক দেশ হিসাবে নেদারল্যান্ডস উঠে আসে। ফরাসী সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮১৫ সালে ফরাসী দেশ থেকে নির্বাসিত হলেন। নেদারল্যান্ডস ফরাসী শাসন থেকে মুক্তি পেল। কিন্তু রাজা হিসাবে রয়ে গেলেন গ্ৰান্ড ডিউক অফ লাক্সেমবার্গ।
ডিউক অফ লাক্সেমবার্গ ১৮১৫ সাল থেকে ১৮৯০ সাল পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস এর রাজা হিসেবে শাসন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করলেন। এরপর বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক দলের অভ্যুত্থান শুরু হল। অনেক গোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক দলের অভ্যুত্থান শুরু হল। গোটা ইউরোপ জুড়ে শিল্প বিপ্লব শুরু হল। শ্রমিক শ্রেনী ধনিক শ্রেণী, বনিক শ্রেনী, পরিযায়ী শ্রেনী, অভিবাসী শ্রেনী, ইত্যাদি সমাজের বিভিন্ন স্তরের সমাবেশ ঘটল এই দেশে। দেখা দিল অনেক গুলি বামপন্থী দল। আবার অনেক গুলি দক্ষিণ পন্থী দল। অনেক গুলি রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রধান প্রধান কয়েকটি দলের নাম যথাক্রমে,
PvdA Labour Party সমাজতান্ত্রিক দল।ডাচ ভাষায় (Partij van de Arbeid) দলের চেয়ারপারসনের নাম ( Esther-Mirjam Sent) হেড অফিস দ্যান হ্যাগ। ১৯৪৬ সালে এর প্রতিষ্ঠা হয়
PVV Party for Freedom দক্ষিণ পন্থী জাতীয়তাবাদী দল। ডাচ ভাষায় (Partij voor de Vrijheid) ২০২০সালে প্রতিষ্ঠিত এই দল খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই দলের নেতা Geert Wilders
VVD People’s Party for Freedom and Democracy ৭৬ বছরের পুরনো এই দল । ডাচ ভাষায় (Volkspartij voor Vrijheid en Democratie) ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত।
দলের নেতা Dilan Yeşilgöz। কনজারভেটিভ লিবারেল দল।
D66 Democrats 66 গনতান্ত্রিক দল। ডাচ ভাষায় (Democraten 66) দলের একনিষ্ঠ নেতা Rob Jetten সোসিয়াল এবং লিবারেল।
CDA Christian Democratic Appeal ডাচ ভাষায় (Christen-Democratisch Appèl)
Henri Bontenbal দলের নেতা। ১৯৭৭ সালে গঠিত এই দল সামাজিক সাম্যবাদী।
SP Socialist Party ডাচ ভাষায় ((Socialistische Partij) দলের নেতা Jimmy Dijk কম্যুনিস্ট পার্টি অফ নেদারল্যান্ডস। ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দল।
CU Christian Union ডাচ ভাষায় (ChristenUnie Christian democracy) দলের নেতা Mirjam Bikker ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি । ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত।
SGP Reformed Political Party
ডাচ ভাষায় (Staatkundig Gereformeerde Partij Christian right)
১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দলের নেতা Chris Stoffer। নেদারল্যান্ডস এর সবচেয়ে পুরনো দল। প্রোটেস্টান্ট সম্প্রদায়ের মুখপত্র। কিন্তু ১৫০ আসনের মধ্যে তিন থেকে চারটি আসন পায়।
PvdD Party for the Animals ডাচ ভাষায় (Partij voor de Dieren Animal welfare)
দলের নেতা Esther Ouwehand। পশু পাখীদের অধিকার, তাদের সুস্থ ভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আইন প্রনয়ন।
পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র ভারতবর্ষের সম্রাট অশোকের সময় এই চিন্তা ভাবনার মিল পাওয়া যায়। সম্রাট অশোক পৃথিবীর ইতিহাসে ভারতবর্ষের একমাত্র সম্রাট,যিনি পশু পাখীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেছিলেন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল বানিয়ে ছিলেন। নেদারল্যান্ডস এ শুধু মাত্র পশু পাখীদের অধিকার নিয়ে একটা রাজনৈতিক দল কাজ করে চলেছে, এটা একটা বিরল ঘটনা।
FvD Forum for Democracy ডাচ ভাষায় (Forum voor Democratie National conservatism) জাতীয় কনজারভেটিভ দল প্রতিষ্ঠাতাThierry Baudet and Henk Otten । ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত। ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশ গ্ৰহন করে দুটো আসন পায়।
আজ পর্যন্ত কোনো দল নেদারল্যান্ডস এর সাধারণ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে নি।
সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে একাধিক দল ভাঙাগড়া, নতুন দলের জন্ম নেওয়া, পুরোনো দুটো তিনটে দল মুছে গিয়ে একটি দলে পরিণত হয়ে , সাধারণ নির্বাচনে অংশ গ্ৰহন করেও ,কোনো লাভ হয় নি। প্রত্যেকটি দল শত চেষ্টা করেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারেনি, আর পারবেও না বলে মনে হয়।
উপরিউক্ত দলগুলি ছাড়াও, আরও অনেক গুলি ছোট বড় দল আছে। অনেক গুলি দল সমাজের বিভিন্ন দিকের প্রতিনিধি দের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে। কিন্তু একটা পুরো দেশের শাসন ব্যবস্থা কে পরিচালিত করতে পারে না। জন্মলগ্ন থেকে এই দেশে রাজতন্ত্রিক ও জোট বদ্ধ সরকারের সমাবেশ। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কখনো এই দেশ পরিচালিত হয় নি। কোনো একটা দলের পক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
জোটবদ্ধ সরকার সাময়িক শর্তাধীনে গঠিত হয়। শর্তাবলী পূরণ করা সম্ভব না হলে সরকার থেকে সরে যায়। সরকার সমর্থনের অভাবে দুর্বল প্রতিপন্ন হয়। নেদারল্যান্ডস এর ক্ষেত্রে সেটাই হচ্ছে। কিন্তু জোট সরকারের একটা সুবিধা , কেউ কোনো অন্যায়,অনিয়ম করতে পারবে না। শুধুমাত্র বানিজ্য ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি করার জন্য অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বানিজ্যিক এলাকা হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে নেদারল্যান্ডস।
পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার , যোহান ক্রুয়েফ, মার্কো ভ্যান বাস্তেন, ডেনিস বার্গ ক্যাম্প, ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড, রুড খুলিত , এডুইন ভ্যান ডার সার, নেদারল্যান্ডস এর থেকেই বিশ্ব ফুটবল জগতে বিখ্যাত হয়েছেন।
হেনড্রিক ইয়ুহানেস ক্রুইফ বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলার দের অন্যতম। টোটাল ফুটবলের প্রবর্তক্। আমস্টারডাম এ জন্ম ১৯৪৭ সালে। মৃত্যু ২০১৬ সালে স্পেনের বার্সেলোনায়। তিন তিন বার ইউরোপের বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছিলেন। ১৯৭১,১৯৭৩,১৯৭৪, সালের ব্যালন ডি অর।
বিশ্বকাপ ফুটবলে ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড,আর রুড খুলিত এর নাম কে না জানে। দুজনেই সুরিনামিজ বংশোদ্ভূত। নেদারল্যান্ড এর ফুটবলকে বিশ্বদরবারে সসম্মানে তুলে ধরেছেন। আরো অনেক ভালো ভালো স্বনামধন্য বিখ্যাত ফুটবলার আছেন এই দেশে।
বিশ্ব ক্রিকেটে নেদারল্যান্ডস ১৯৯৬ থেকে একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে। “The Flying Dutchmen” এই টিম নেদারল্যান্ডস আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পুরুষ বিভাগে প্রতিনিধিত্ব করে। The Royal Dutch Cricket Association এর তত্বাবধানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্ৰহন করে।
বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ভ্যান গগের জন্ম এই দেশে । পৃথিবীর একজন বিখ্যাত চিত্রকর। ভিনসেন্ট উইলিয়াম ভ্যান গগ। জন্ম ১৮৫৩ সালে Zundert, Nederlands । মৃত্যু ১৮৯০ সালে ফ্রান্সে। মাত্র ৩৭ বছর । নিজের বন্দুকের গুলিতে নিহত হন। শিল্পীরা একটু আনমনা হন। তাই প্রানঘাতী কোনো কিছু তাদের হাতে না দেওয়াই ভালো। ভিনসেন্ট ঐটুকু জীবনকালের মধ্যে কী অসাধারণ প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। ২১০০ টি চিত্রকর্ম করে গেছেন। তার মধ্যে ৮৬০ টি ওয়েল পেইন্টিং। ভাবা যায় ! তার জীবনের শেষের দুই বছরে , তিনি বেশিরভাগ শিল্পকর্ম গুলি করে গেছেন।
> বিখ্যাত ডাচ ব্যক্তিরা
রাজা এবং রাজনীতিবিদ>>
উইলিয়াম দ্য সাইলেন্ট (1533–1584), হাউস অফ অরেঞ্জ-নাসাউ-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং স্প্যানিশদের বিরুদ্ধে ডাচ বিদ্রোহের প্রধান নেতা যা আশি বছরের যুদ্ধ শুরু করেছিল।
পিটার স্টুইভেস্যান্ট (1592–1672), 1647 থেকে 1664 সাল পর্যন্ত নিউ নেদারল্যান্ডের (আধুনিক NY, NJ এবং CT) উপনিবেশের শেষ ডাচ গভর্নর।
অরেঞ্জের তৃতীয় উইলিয়াম (1650–1702), স্ট্যাডহোল্ডার এবং ইংল্যান্ডের রাজা
জোহান ডি উইট (1625–1672), রাষ্ট্রনায়ক।
নেভিগেটর>>>
আবেল তাসমান (1603–1659), নেভিগেটর যিনি অন্যদের মধ্যে আবিষ্কার করেছিলেন তাসমানিয়া (তার নামানুসারে), নিউজিল্যান্ড এবং টোঙ্গা।
Michiel de Ruyter (1607–1676), ডাচ ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত অ্যাডমিরাল।
জ্যাকব রোগভেইন (1659–1729), নেভিগেটর যিনি ইস্টার দ্বীপ আবিষ্কার করেছিলেন।
শিল্পী>>
হায়ারোনিমাস বোশ (1450–1516), রেনেসাঁ চিত্রশিল্পী।
রেমব্রান্ট ভ্যান রিজন (1606–1669), চিত্রশিল্পী।
জান ভার্মির (1632–1675), চিত্রশিল্পী।
ভিনসেন্ট ভ্যান গগ (1853–1890), ইমপ্রেশনিস্ট চিত্রশিল্পী।
পিট মন্ড্রিয়ান (1872–1944), অভিব্যক্তিবাদী চিত্রশিল্পী।
অড্রে হেপবার্ন (1929–1993), অভিনেত্রী (তার মায়ের দ্বারা ডাচ, তার বাবার ইংরেজি, জন্মসূত্রে বেলজিয়ান)।
থিও ভ্যান গগ (1957–2004), চলচ্চিত্র পরিচালক।
অন্যান্য বিখ্যাত ডাচ মানুষ>>>>
পোপ আদ্রিয়ান ষষ্ঠ (1459–1523), ইতিহাসের কয়েকজন অ-ইতালীয় পোপের মধ্যে একজন।
ডেসিডেরিয়াস ইরাসমাস (1466/1469- 1536), লেখক, বিতর্কবিদ, মানবতাবাদী এবং ধর্মতাত্ত্বিক।
হুগো গ্রোটিউস (1583–1645), আইনজ্ঞ যিনি আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
বারুচ স্পিনোজা, (1632–1677), দার্শনিক।
ক্রিশ্চিয়ান হাইজেনস, (1629–1695), গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং পদার্থবিদ, পেন্ডুলাম ঘড়ির উদ্ভাবক।
জেরার্ড (1858–1942) এবং অ্যান্টন ফিলিপস (1874–1951), রয়্যাল ফিলিপস ইলেকট্রনিক্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
অ্যান ফ্রাঙ্ক (1929–1945), দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ডায়েরিস্ট।
উইম ডুইসেনবার্গ (1935–2005), ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম সভাপতি।
ফ্রান্স ভ্যান ডার হফ (1939-), ম্যাক্স হ্যাভেলারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, প্রথম ফেয়ারট্রেড সার্টিফিকেশন উদ্যোগ।
উল্লেখযোগ্য ডাচ-আমেরিকান মানুষ>>>
মার্টিন ভ্যান বুরেন (1782–1862), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 8 তম রাষ্ট্রপতি,
প্রথম রাষ্ট্রপতি যার পরিবার ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ থেকে আসেনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র রাষ্ট্রপতি যার প্রথম ভাষা ইংরেজি ছিল না। (কিন্তু ডাচ)।
কর্নেলিয়াস ভ্যান্ডারবিল্ট (1794–1877),
শিল্প উদ্যোক্তা।
টমাস আলভা এডিসন (1847–1931), বিখ্যাত উদ্ভাবক। তার উদ্ভাবনের জন্য বিশ্বব্যাপী 1500-এর বেশি পেটেন্ট জমা হয়েছে।
থিওডোর রুজভেল্ট (1858–1919), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 26 তম রাষ্ট্রপতি।
ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট (1882–1945), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 32 তম রাষ্ট্পতি।
এতসব মহান মানুষের জন্ম হয়েছে নেদারল্যান্ডস এ। আমরা কি একবারও পিছন ফিরে তাকাই ? না, কখনো মনে রাখি? এই বিশ্ববরেণ্য মানুষদের। যারা পৃথিবীতে এসে মানব সভ্যতার উন্নয়নের জন্য কতকিছু করে গেছেন। ডাচ বংশোদ্ভূত মানুষ আমেরিকার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন তিন তিনবার। টমাস আলভা এডিসন পৃথিবীকে আলো দেখিয়েছেন পনেরশোর উপরে আবিষ্কার করে। মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
হুগো গ্ৰটিয়াস আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তি প্রনয়ন করে গেছেন।
আর বিখ্যাত অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের কথা সারা বিশ্বের মানুষ জানে।
এতক্ষন নেদারল্যান্ডস এর বিভিন্ন দিকের প্রাধান্যের কথা বলা হল। যা আমাদের সবাইকে উজ্জীবিত করে এক নতুন স্বপ্ন দেখাবার। ছবির মতো দেখতে দেশটার প্রধান উপাদান ঐসব বিখ্যাত মানুষগুলি।
ভালো মানুষ না হলে ভালো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে না। সেই দেশ তত সুন্দর , যে দেশের মানুষ যত সুন্দর। আমরা প্রার্থনা করি ,আরো ভালো ভালো মানুষের জন্ম হোক এই দেশে। যারা পৃথিবীকে এক সুন্দর পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। জন্ম হবে এইখানে স্বর্গের।
আলমেরে শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। আর দশ বছরের শেষে দেখা যাবে অনেক পতিত জমিতে বাড়ি তৈরি করতে হচ্ছে , মানুষের আবাসনের যোগান দিতে। ভালো ভালো মানুষের সমাবেশ যত ঘটবে। আমাদের পরিয়াবরন তত উন্নত হবে। শুধু অর্থ নয়, চাই শান্তি, যেটা এই দেশের জন্মলগ্ন থেকেই আছে।
তুষার রঞ্জন মণ্ডল।